NurStudio

রন্ধন~সুস্থতা~সুন্দরতা~জীবন-বৈচিত্র্য

Bangla recipe, খাদ্য ও স্বাস্থ্য টিপস, খাদ্য গুনাগুন, সুষম ও পুষ্টিকর খাবার

সুষম ও পুষ্টিকর খাবারের প্রয়োজনীয়তা ও গুনাগুণ


সুষম ও পুষ্টিকর খাবারের প্রয়োজনীয়তা 

আমাদের শরীর ও স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য পুষ্টিকর ও সুষম খাবার প্রয়োজন। আমরা একটু খাবারের প্রতি সচেতন হলে সবাই সুস্থ্য, সবল এবং সুন্দর থাকতে পারি। শরীর স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য ও বিভিন্ন অসুখ-বিসুখ হতে রক্ষা পেতে হলে সব ধরনের ভিটামিন জাতীয় পুষ্টিকর খাবার খাওয়া উচিৎ যেমন- বিভিন্ন রঙ্গিন ফলমূল, ডিম, বাদাম, বিভিন্ন সবুজ ও রঙ্গিন শাকসবজি, বীজ জাতীয় খাবার, মাছ ও মাংস আবার অনেক খাবার আছে যা রান্না ছাড়াই কাঁচা ও পাকা খাওয়া হয় যেমন- শশা, গাজর। 

প্রতিদিন খাবর খাওয়ার সময় অথবা রান্না করার সময় আমরা কখনই পুষ্টিগুণের খেয়াল রাখি না। খাবারে পুষ্টিগুন আছে কিনা, কিভাবে ফলমূল ও শাকসবজি কেটে খেতে হয়, কিভাবে রান্না করলে পুষ্টিগুণ ঠিক থাকে, কিভাবে জীবানুমুক্ত করে নিতে হয়, কেন নিয়মিত খাবার খাওয়া প্রয়োজন আমরা অনেকেই জানি না। সঠিক নিয়ম মেনে খাবার খেলে শরীর সুস্থ্য, সবল ও ত্বক সুন্দর থাকে। 

সুষম খাবারের উপকারিতাগুলো হলো-

শরীরের অতিরিক্ত চর্বি কমে, ওজন কমায়, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে। শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করে, ত্বক ভাল রাখে, তারুণ্য ধরে রাখে, কোষ্ঠ-কাঠিন্যের সমস্যা দূর করে, প্রস্রাবের (জ্বালাপোড়া) সমস্যা দূর করে, স্মৃতি শক্তি বাড়ে, শরীর সুস্থ্য রাখে, মাথা ঠান্ডা রাখে ও ভালো ঘুম হয়, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সাহায্য করে, এমনকি ক্যান্সারের মতো রোগ প্রতিরোধেও বেশ কার্যকর। এছাড়াও শরীরের বিভিন্ন রোগ ভাল করতে সাহায্য করে এবং বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা করে।

 

সুষম খাদ্যের কাজ: 

– শাককসবজিতে প্রচুর পরিমাণ- সি, ই, প্রোটিন, আয়রন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম, বিটা-ক্যারোটিন ও খাদ্য আঁশ থাকে। খনিজ লবণ এবং অন্যান্য জরুরি ভিটামিন উপাদানও পেতে পারি শাকসবজিতে। আমাদের শরীর সুস্থ-সবল রাখতে শাক-সবজির ও ফলমূলের গুরুত্ব অপরিসীম।

– রান্না করতে আমরা দিনের অনেকটা সময় ব্যয় করে থাকি। তাই একটু কষ্ট করে সঠিক নিয়ম মেনে খাবারের পুষ্টিগুণ ঠিক রেখে শাক-সবজি রান্না করলে এবং খেতে পারলে, শরীরও সুস্থ থাকবে।

– পুষ্টিগুণ ঠিক রেখে ভাল মানের খাবার খেতে হলে, রান্না করার সময় পুষ্টিগুণ যাতে ঠিক থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখা অত্যন্ত জরুরী।

– শুকনা জাতীয় খাবারের জিনিসগুলো বেশিদিনের জন্য কিনে রাখতে পারেন। কাঁচা জাতীয় শাকসবজি অথবা ফলমুল বেশিদিন রাখলে পুষ্টিগুণ কমে ও নষ্টও হয়ে যায়, শাকসবজি ১/২ দিন অথবা বেশী হলে ৩/৪ দিনের জন্য কিনে রাখতে পারেন।

– ফল ও শাক-সবজি কাঁটার আগে ধুয়ে নিবেন, কাটার পর ধুলে ভিটামিন কমে যায়, সবজি বেশি পাতলা করে কাটবেন না। যদি ধোয়ার আগে কেটে ফেলেন, তাহলে বেশি সময় পানিতে ভিজিয়ে রাখা ঠিক না, পানিতে দিয়ে সাথে সাথে ধুয়ে তুলে ফেলবেন। 

– সবজি খোসাসহ রান্না করলে বেশি পুষ্টি পাওয়া যায়, যদি খোসা ছিলতে চান খুব পাতলা করে কাটবেন। 
– প্রতিদিন তাজা শাকসবজি, মাছ, মাংস, ডিম ও যেকোন খাবার রান্না করে খাওয়া ভাল। 
– ভাতের মাড় ফেলবেন না, তাতে গুনাগুণ কমে যায়। বসা ভাত রান্না করতে চেষ্টা করুন বা কুকারে রান্না করতে পারেন।

– শাকসবজি সিদ্ধ করে পানি ফেলবেন না কারণ শাকসবজিতে যে উপাদান থাকে তা কমে যায়। 
– সব মসলা দিয়ে কসিয়ে নেওয়ার পর গরম পানি দিয়ে সবজি দিবেন, বেশি সময় ধরে রান্না বা সিদ্ধ করবেন না। শাক-সবজির রং ঠিক রেখে রান্না করবেন এবং ঢেকে রান্না করবেন।(ঠান্ডা পানি দিলে পানি গরম হওয়ার পর সবজি দিলে ভাল)।

– সব সময় শাক ও সবজি তেল দিয়ে রান্না করবেন এবং সবজিতে যে ভিটামিন থাকে তা তেলের সাথে সহজেই মিশে যায়। 

– পুরানো তেল অথবা পোড়া তেল পরেরদিন রান্না করবেন না(আজ তেলে কোনকিছু ভাজি করলেন পরেরদিন সেই তেল দিয়ে রান্না না করাই ভাল)। 
– কাঁচা সবজি খেলে আরও বেশি পুষ্টি পাওয়া যায়-প্রতিদিন বিভিন্ন সবজি মিশিয়ে সালাদ বানিয়ে খাবেন।

– অনেকদিন ধরে ফ্রিজে রাখা ফল ও শাকসবজির ভিটামিন কমে যায়। আমরা সবাই মনে করি ফ্রিজে খাবার রাখলেই ভাল থাকে।ফ্রিজে খাবার বেশিদিন থাকলে ভিটামিন কমে যায়, এটা অনেকেই জানি না।

– ফ্রিজে খাবার বক্সে ভরে রাখবেন বা ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রাখবেন, আবার ফ্রিজে রাখা খাবার বারবার গরম করে খেলেও ভিটামিন কমে যায়।

-খাবার তৈরি করার সময়, খাবার খাওয়ার সময় হাত ভাল করে ধুয়ে নিবেন এবং পাতিল, কড়াই ও অন্যান্য বাসনপত্র ভাল করে ধুয়ে নিবেন বা জীবানুমুক্ত করে নিবেন। 
– চর্বিজাতীয় খাবার কম খাবেন, ভাজাপোড়া কম খাবেন, হোটেলের খাবার কম খাবেন এবং তেল ও মসলা কম ব্যাবহার করবেন। পানি বেশি খাবেন, পানি জাতীয় ফলমূল খাবেন।

– নিয়মিত হাঁটাহাটি করবেন, ব্যায়াম করবেন এবং নানারকম দুশ্চিন্তা করা থেকে দুরে থকবেন।

– বাজারে অনেক ধরনের মসলা পাওয়া যায়, সব সময় ভাল মসলা ভেজালমুক্ত বা কেমিক্যালমুক্ত কিনা দেখে কিনবেন।

– বাজারে আজকাল প্রায় সবধরনের জিনিস রেডিমেড পাওয়া যায়, যত ভাল কোম্পানী হউক না কেন, তারিখ দেখে কিনবেন এবং তারিখ শেষ হওয়ার আগে খেয়ে ফেলবেন।

– বাজার থেকে রেডিমেড বা প্যাকেট করা জিনিষ কিনে এনে ঘরে রেখে দিলে যেকোন সময় খুব সহজেই রান্না করতে পারেন, কারণ আমরা সবাই ব্যস্ত থাকি, তাই সহজ উপায় খুঁজে বেড়াই, আমার মতে রেডিমেড যেকোন জিনিষ মানে ফাঁকিবাজি, বেশিরভাগ জিনিষই খারাপ বা নষ্ট থাকে। একথাও সত্যি আবার কিছু কিছু ভালোও থাকে। তাই দেখে শুনে বুঝে কিনবেন। 
– ঠিকমতন খাবার খেয়ে থাকার পরও যদি শরীর একটুও ভালো না থাকে এবং শরীরে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয়, তবে এর কারণ হচ্ছে শরীরে পুষ্টির অভাব পূরন হচ্ছে না। সঠিক নিয়ম মেনে নিয়মিত শাক-সবজি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারলে কখনোই সহজে অসুস্থ্য হবেন না, এমনকি অতিরিক্ত ভিটামিনের অভাব হবে না, সহজে ডাক্তার ও ঔষধ খাওয়ার প্রয়োজন হবে না।

সুস্থ্য সবল দেহ চান, নিজে এবং পরিবারকে পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খাওয়ান ও আশেপাশে অন্যদেরকেও উৎসাহিত করুন ও খেয়াল রাখুন। 
লেখক/অবদানকারী: অবদানকারী পৃষ্ঠাটি পড়ুন 
বিজ্ঞাপন

আমাদের ফেসবুক পেজ @NURStudioBD 

আমাদের ইউটিউব চ্যানেল @Cooking,Health,&Beauty 
ইংরেজি ভাষায় আমাদের লাইফস্টাইল ব্লগটি ঘুরে আসুন AUHStyle – It’s A Coeval Lifestyle 

আরও একটি সম্পর্কিত পোস্ট পড়ুন সুষম খাদ্যের প্রয়োজনীয়তা 
আরও একটি সম্পর্কিত পোস্ট পড়ুন সুষম খাবারের গুরুত্ব