ঈদুল-আযহা ও কুরবানি নিয়ে কিছু কথা



ঈদুল-আযহা ও কুরবানি নিয়ে কিছু কথা

সবাইকে ঈদ মোবারক!

মহান আল্লাহ তা‘লা হযরত ইব্রাহীম (আঃ) কে স্বপ্নে তার প্রিয় বস্তুটি আল্লাহর নামে কুরবানি করার নির্দেশ দেন। হযরত ইব্রাহীম (আঃ) উট কুরবানি করেন, এরপর পুনরায় হযরত ইব্রাহীম (আঃ) স্বপ্নে দেখেন, আবার হযরত ইব্রাহীম (আঃ) উট কুরবানি করেন, পুনরায় হযরত ইব্রাহীম (আঃ) স্বপ্নে দেখার পর চিন্তা করে দেখলেন তার সবচেয়ে প্রিয় বস্তু তার পুত্র ইসমাইল(আঃ) এছাড়া আর কোন প্রিয় বস্তু নেই। তখন হযরত ইব্রাহীম (আঃ) পুত্রকে কুরবানি দেয়ার জন্য আরাফাতের মাঠের উদ্দেশ্যে রওনা দিলেন। যখন হযরত ইব্রাহীম (আঃ) আরাফাতের ময়দানের উপর তার পুত্র ইসমাইল (আঃ) কে কুরবানি দেয়ার জন্য গলায় ছুরি চালালেন তখন অবাক হয়ে দেখেন তার পুত্রের জায়গায় একটি পশু কুরবানি হয়েছে। 
মহান আল্লাহ তা’আলা ইসলামের রাসুল হযরত ইব্রাহীম (আঃ) কে পরীক্ষা করেছিল, মহান আল্লাহ’র এই আদেশ পালন করে কঠিন পরীক্ষায় উর্ত্তীর্ণ হন ইব্রাহীম (আঃ)। আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি লাভের জন্য, এই ঘটনাটি স্মরন করে সারা বিশ্বের মুসলিম পরিবার প্রতি বছর এই দিনটি (ঈদুল-আযহা) নামে উদযাপন করে থাকে। ঈদ একটি ইসলাম ধর্মীয় উৎসব। জ্বিলহজ্জ মাসের চাঁদ দেখার পর ইসলামী কেলেন্ডার অনুযায়ী জ্বিলহজ্জ মাসের ১০ তারিখে ঈদুল আযহা পালন করা হয়। মুসলিম পরিবারদের জন্য ঈদুল-ফিতর ও ঈদুল-আযহা সবচেয়ে বড় উৎসব। ঈদ মানে সব দুঃখ, বেদনা, ভুলে আনন্দ ও খুশিতে মেতে উঠা। 
ঈদের দিন সকালে ফজরের নামাজের পর গোসল করে নতুন জামা-কাপড় পড়ে, সবাই মিলে ঈদগাহ মাঠে অথবা মসজিদে গিয়ে দুই রাকাত ঈদুল আযহার নামাজ আদায় করা ওয়াজিব। নামাজের পর কুরবানির প্রস্তুতি নেয়া হয়। জ্বিলহজ্জ মাসের ১০ তারিখ হতে ১২ তারিখ এই তিন দিন ঈদুল-আযহার কুরবানি করা করা যায়। কুরবানি সার্মথ্যবান নারী ও পুরুষ উভয়ের উপর ওয়াজিব। 
যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী গরু, ছাগল, খাসী, ভেড়া, মহিষ, উট ইত্যাদি আল্লাহর নামে কুরবানি করা উত্তম। আমাদের দেশে মহিষ, গরু, খাসী, ছাগল ইত্যাদি বেশি কুরবানি করে হয়ে থাকে। খাসি বা ছাগলের বয়স ১ বছর ও গরুর বয়স ২ বছর হতে হবে। একটি গরু ৭ ভাগে দেয়া যায়, যেমন- ২, ৩, ৫ বা ৭ ব্যাক্তি কুরবানির শরিক হতে পারে। 
কুরবানির মাংস গরীবদের, প্রতিবেশিদের, ও আত্মীয়-স্বজনদের ভাগ করে দেয়া হয়। কুরবানি করার পর মাংস তিন ভাগ করে এক ভাগ নিজের, এক ভাগ আতামীয়স্বজন ও একভাগ গরীব মিসকিন অথবা সমাজে দেয়া হয় অথবা কুরবানি করার পর ইসমামের নিয়মনুযায়ী মাংস ভাগ করা হয়। কুরবানির পশুর চামড়া বিক্রির টাকা দান করার নির্দেশ রয়েছে। 
ঈদের দিনে ধনী-গরীব, ছোট-বড় ও দুশমন-শত্রু কোন ভেদাভেদ নাই, সবকিছু ভুলে ঈদের দিনে এক কাতারে নামাজ পড়ি ও একজন আরেকজনের গলায় মিলে থাকি ও কুরবানি করে থাকি। ঈদ আমাদের একজন ও আরেক জনের প্রতি আন্তরিকতা ও ভ্রাতৃত্ববোধ শিক্ষা দেয়।
সমাজের সকল সচেতন ও বিবেকবান মানুষদের কাছে আবেদন এই শিক্ষা আমরা যেন প্রতিদিন অনুসরণ করতে পারি, এব্যাপারে ভেবে দেখবেন। আসুন আমরা সবাই মিলে আল্লাহতালার নিকট দোয়া করি আমরা যেন কুরবানির ও ঈদুল-আযহার প্রকৃত শিক্ষা অন্তরে ধারণ করি। গরীব, অসয়হায় ও সুবিধা বঞ্চিত মানুষদের মুখে একটু হাসি নিয়ে আসি, তাদের কষ্ট দূর করতে চেষ্টা করি, ও নিজের ঈদের আনন্দের কিছু অংশ তাদের কাছে পৌঁছে দেই। 
আমিন!!!
লেখক/অবদানকারী: অবদানকারী পৃষ্ঠাটি পড়ুন 
বিজ্ঞাপন


আমাদের ফেসবুক পেজ @NURStudioBD
ইংরেজি ভাষায় আমাদের লাইফস্টাইল ব্লগটি ঘুরে আসুন  AUHStyle – It’s A Coeval Lifestyle
আরও একটি সম্পর্কিত পোস্ট পড়ুন  কুরবানির ঈদ ও প্রাসঙ্গিক কথা 
আরও একটি সম্পর্কিত পোস্ট পড়ুন  ঈদুল আজহা ও কুরবানির গুরুত্বপূর্ণ তথ্য