ঈদকে সবার জন্য আনন্দময় করতে আমরা কি কি করতে পারি?


ঈদকে সবার জন্য আনন্দময় করতে আমরা কি কি করতে পারি? 

সবাইকে ঈদ মোবারক। ঈদ মুসলিমদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব। ঈদ মানে সব দুঃখ, বেদনা ভুলে আনন্দ ও খুশিতে মেতে উঠা। সামনে আসছে কুরবানীর ঈদ; এই ঈদ আমদের স্মরণ করিয়ে দেয় হযরত ইবরাহীম (আ.) ও ইসমাঈল (আ.)-এর মহান ত্যাগের কথা। প্রতিবছর যিলহাজ্জ মাসের ১০ তারিখে আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টিলাভের জন্য আমরা নিয়ম মেনে পশু কুরবানী দিয়ে থাকি, এর সাথে সাথে নিজেদের লোভ, হিংসা, বিদ্বেষও কুরবানী দেয়া উচিত।

যদিও ঈদ মানে আনন্দ; কিন্তু আমাদের মধ্যে কয়জনের জন্য ঈদ আনন্দ বয়ে নিয়ে আসে, কয়জনই বা এই দিনে ভালো জামাকাপড়, ভালো খাবার-দাবার খেয়ে থাকে বা পেয়ে থাকে? যদিও আমরা সব সময় বলে থাকি মুসলমান-মুসলমান ভাই-ভাই বা বোন-বোন, আসলে কি আমরা এটা বিশ্বাস করি, নাকি শুধুই কথার কথা বলি। যদি তাই না হয়, এমনকি ঈদের দিনেও আমরা কখনও আমাদের প্রতিবেশীর খোঁজ নেই না। প্রতিবেশীতো দূরের কথা, যেমন সহোদর চার ভাই-বোন, যাদের মধ্যে দু’জনের হয়ত প্রচুর টাকা পয়সা আছে, অন্য দু’জনের নেই, যে দু’জনের আছে তারা হয়ত নিজের ভাই-বোনের খোঁজও নেয়না। যাইহোক সবাই একরকম না; এই সমাজে অনেক হৃদয়বান লোকজনও আছেন, যারা শুধু পরিবারের না, প্রতিবেশী ও সমাজের উন্নতির কথাও চিন্তা করে, তবে এদের সংখ্যা খুবই কম।

অনেকেই কাজের জন্য বাড়ী থেকে দুরে থাকে; চাকরি, ব্যাবসা, ও বিভিন্ন কাজে বাবা-মা, ভাই-বোন, বিশেষ করে পরিবার থেকে অনেক দূরে থাকেন, আবার অনেকেই আছেন ইচ্ছে করে দূরে থাকেন। অন্যদিনগুলোর কথা নাহয় বাদই দিলাম, এই ঈদের একটি দিনে এই দূরে খাকা প্রিয় মানুষগুলো জন্য কত পরিবার অপেক্ষা করে খাকে। দূরে খাকা এ্ই মানুষগুলো কি পারে না নিজের পরিবারের প্রতি একটু দায়িত্ববোধ, মায়া ও মমতা জাগিয়ে তুলতে, কাছে যেতে? যত কষ্টই হউক না কেন, যতদূরেই থাকা হোক না কেন, পরিবারের সাথে ঈদ পালন করার যে সুখ, তৃপ্তি, শান্তি, তা অন্য কোনভাবে পাওয়া সম্ভব না। 
ধনী, গরীব, ফকির-মিসকিন, অসহায়, ও ভালো-মন্দ সব মিলিয়ে আমাদের বসবাস। একজন ধনী লোক যার টাকা পয়সার অভাব নাই, তার ঈদের আনন্দেরও শেষ নাই। দামী জামাকাপড়, কেনা-কাটা, খাওয়া-দাওয়া কোন কিছুর হিসাব নেই, আসলে প্রতিদিনই তাদের ঈদ। তাদের আনন্দ সারাবছরই চলে। অন্যদিকে একজন গরীব, অসহায় মানুষ যার অভাবের শেষ নাই, দিনের খাবারও যোগাড় করতে পারে না, সেখানে ঈদে ভাল জামা কাপড় ও খাবার কোথায় পাবে? তারপরও তারা ঈদে, বিশেষ করে তাদের পরিবার ও ছেলে-মেয়েদের নতুন জামাকাপড় ও একটু ভাল খাবার দেয়ার প্রাণপণ চেষ্টা করে। অনেকে পারে, অনেকে হাজার চেষ্টা করেও ঈদের দিন জামাকাপড়তো দূরের কথা একটু সেমাই কেনার পয়সাও যোগাড় করতে পারে না, তাদের কাছে ঈদের দিন প্রতিদিনের মত কাটে। 
আমরা কি পারি না আমাদের প্রতিবেশী গরীব-অসহায় লোকদের একটু সাহায্য করতে, যেন তাদের জীবনেও ঈদ আনন্দ বয়ে নিয়ে আসে। হতে পারে আপনার ও আমার অবস্থা হয়ত এক সময় এমন ছিল অথবা এমনও হতে পারে আমাদের আপনজন হয়ত এমন গরীব অসহায় আছে। যদি অতিরিক্ত খরচের পয়সা থেকে একটুও কোন অসহায়, গরীব মিসকিনদের দেয়া যায়, তাহলে তাদেরও উপকার হয়, আপনারও সওয়াব হয়। কত লোকজন আছে দু’বেলা খেতে পারে না, রোগের চিকিৎসা করতে পারে না। এসব ব্যাপারে একটু ভেবে দেখবেন, যদিও এটা সম্পূর্ণই আপনার ব্যক্তিগত ব্যাপার। 
আমরা সবাই রক্ত মাংসের মানুষ, তারপরও নিজেকে ছাড়া অন্য মানুষকে মানুষ মনে করি না এই ভেদাভেদ দূর করতে হলে আমাদের সবাইকে এক হতে হবে, তাহলেই আমার, আপনার ও সবার উন্নতি হবে। ঈদের দিনে ধনী-গরীব, ছোট-বড় ও বন্ধু-দুশমন কোন ভেদাভেদ নাই, সবকিছু ভুলে ঈদের দিনে এক কাতারে নামাজ পড়ি ও একজন আরেকজনের গলায় মিলে থাকি ও কুরবানী করে থাকি। 
আসুন আমরা সবাই মিলে প্রতিঙ্গা করি এবং আল্লাহর কাছে দোয়া করি যেন ত্যাগের এই মহিমাকে সবাই অন্তরে ধারণ করতে পারি, গরীব, অসয়হায় ও সুবিধা বঞ্চিত মানুষদের মুখে হাসি নিয়ে আসতে পারি, ও চেষ্টা করি যেন নিজের ঈদের আনন্দের কিছু অংশ তাদের কাছে পৌঁছে যায়। 
বিজ্ঞাপন

আমাদের ফেসবুক পেজ @NURStudioBD
আমাদের ইউটিউব চ্যানেল @Cooking,Health,&Beauty
ইংরেজি ভাষায় আমাদের লাইফস্টাইল ব্লগটি ঘুরে আসুন AUHStyle – It’s A Coeval Lifestyle