NurStudio

রন্ধন~সুস্থতা~সুন্দরতা~জীবন-বৈচিত্র্য

জীবন ও বৈচিত্র্য, বিজয় দিবস, বিজয়ের উৎসব আমরা যেভাবে পালন করি

বিজয় দিবস, আর বিজয়ের উৎসব আমরা যেভাবে পালন করি


বিজয় দিবস, আর বিজয়ের উৎসব আমরা যেভাবে পালন করি

বিজয় দিবস, আর বিজয়ের উৎসব আমরা যেভাবে পালন করি
আজ ১৬ই ডিসেম্বর, গৌরবময় বিজয় দিবস। ১৯৭১ সালে দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে বহু প্রাণ ও রক্তের বিনিময়ে এই দিনে বীর বাঙালি ছিনিয়ে আনে বিজয়ের লাল পতাকা আর আমরা অর্জন করি বিজয়। ১৬ই ডিসেম্বর ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বর্বর পাকিস্তান বাহিনীর আত্মসমর্পণের মাধ্যমে পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশ নামে একটি নতুন স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের আত্মপ্রকাশ ঘটে। আমরা বিশ্বের দরবারে স্বাধীন জাতি হিসেবে যাত্রা শুরু করি। ১৬ই ডিসেম্বর আমাদের জাতীয় দিবস ও জাতি হিসেবে সবচেয়ে স্মরণীয় দিন। 

আরও পড়ুন ২১ ফেব্রুয়ারীর শহীদদের স্মরণে

বিজয় দিবসের এই দিনটি শুধু আমাদের বিজয়েরই নয়, বেদনার দিন ও জাগরণের দিন। প্রতিটি বিজয়ের জন্য কঠোর পরিশ্রম, ত্যাগ-তিতিক্ষা ও সংগ্রামের প্রয়োজন হয়। আমাদের এই বিজয় দিবস বীর বাঙালির সুদীর্ঘ সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের ফসল। প্রথম থেকেই পাকিস্তানি শাষণ-শোষণ থেকে বাঙালিদের মুক্তিলাভের ইচ্ছা ছিল। বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলনে ১৯৬৯ সালে গণ-অভ্যুথানে রূপ নেয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে নানা আন্দোলনের মাধ্যমে তা প্রবল আকার ধারণ করতে থাকে। বাঙালির ন্যায্য দাবিকে দমন ও ধ্বংস করার জন্য ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ রাত্রে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী বাঙালিদের উপর বর্বর, নিষ্ঠুরতা শুরু করে। 

বাংলার জনগনের প্রতি বঙ্গবন্ধুর ডাক
বঙ্গবন্ধুর ডাকে বাঙ্গালিরা রুখে দাঁড়ায়, ছাত্র-শিক্ষক, ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার, কৃষক-শ্রমিক, শিল্পী-সাহিত্যিক, নারী-পুরুষ, হিন্দু-মুসলিম, বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান, ছোট-বড় সকলকে নিয়ে গঠিত হয় মুক্তিবাহিনী। বীর বাঙ্গালিরা ঝাঁপিয়ে পড়ে মুক্তির সংগ্রামে। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীরা যেখানে-সেখানে নিরীহ জনসাধারণকে গুলি করে হত্যা করে, ঘরবাড়ি, অফিস-আদালত, দোকান-পাট জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ছার-খার করে ফেলে, লুট-পাট করে, মা-বোনদের উপর করে পাশবিক নির্যাতন। প্রাণ বাঁচাতে সহায়সম্বলহীন এক কোটি মানুষকে আশ্রয় নিতে হয় প্রতিবেশী দেশ ভারতে। তবু বাঙালি দমে যায় নি। পৃথিবী অবাক তাকিয়ে দেখে। অবশেষে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর পরাজয় স্বীকার করতেই হয়। ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর এদেশের মুক্তিসেনা ও মিত্রবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে। রক্তাক্ত সংগ্রামের অবসান ঘটে। বাংলাদেশ শত্রুমুক্ত হয়। সূচিত হয় বাংলাদেশের মহান বিজয়।

যাদের ত্যাগ-তিতিক্ষা ও রক্তের বিনিময়ে আমরা এই মহান বিজয় পেয়েছি, তাঁদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করে প্রতি বছরই ১৬ই ডিসেম্বর যথাযথ ভাবগাম্ভীর্য, বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে পালন করে থাকে। ১৬ ডিসেম্বর ভোরে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসের সূচনা ঘটে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের প্রতি বিশেষ শ্রদ্ধা নিবেদনের অংশ হিসেবে ঢাকার সাভারে অবস্থিত জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্যে দিয়ে দিবসটির শুভ সূচনা করেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতাকর্মী, দলীয় নেতাকর্মী এবং বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের মানুষ। 

বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণ বিজয় দিবস পালন করে। দেশের সকল স্কুল-কলেজে, ঘর-বাড়িতে, দোকান-পাট, রিক্সা-গাড়ি ইত্যাদিতে লাল-সবুজ পতাকা উত্তোলন করা হয়। স্কুল ও কলেজে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বিশেষ করে মসজিদ, মন্দিরে ও বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের আত্মার শান্তি ও দেশের কল্যাণ কামনায় প্রার্থনা করা হয়। বিভিন্ন জায়গায় বিজয় মেলার আয়োজন করা হয়। 
স্কুল ও কলেজের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন
সরকারি ব্যবস্থাপনায় এদিনটি বেশ জাঁকজমকভাবে পালন করা হয়। জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে অনুষ্ঠিত সম্মিলিত সামরিক কুচকাওয়াজে সালাম গ্রহণ করেন দেশের মাননীয় রাষ্ট্রপতি কিংবা প্রধানমন্ত্রী। মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিসভার সদস্য, বিরোধীদলীয় নেতাকর্মী, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনদের উপস্থিতিতে হাজার হাজার মানুষ এই কুচকাওয়াজ উপভোগ করেন। বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে যা বেতার ও টেলিভিশনে প্রচারিত হয়। এছাড়াও রাতে শহরের বিভিন্ন ভবন আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয। এভাবেই সারা দেশে উৎসবমুখর পরিবেশে পালিত হয় আমাদের প্রিয় বিজয় দিবস।
বিজ্ঞাপন

আমাদের ফেসবুক পেজ @NURStudioBD
আমাদের ইউটিউব চ্যানেল @Cooking,Health,&Beauty
ইংরেজি ভাষায় আমাদের লাইফস্টাইল ব্লগটি ঘুরে আসুন Ah!Story – It’s A Coeval Lifestyle
আরও একটি সম্পর্কিত পোস্ট পড়ুন বিজয় দিবস প্রসঙ্গে কিছু কথা
আরও একটি সম্পর্কিত পোস্ট পড়ুন ‘শহিদের রক্ত বৃথা যায় না, যেতে পারে না!’