বাবার জন্য ভালবাসা
বিশ্ব বাবা দিবস, সমগ্র বিশ্বজুড়ে প্রতিবছর জুন মাসের তৃতীয় রবিবার পালন করা হয়। এ দিবসটির সূত্রপাত হয় ১৯১০ সালে ওয়াশিংটনের স্পোকান শহরে।
প্রতিটি সন্তান তার বাবাকে দেখেই বড় হয়, শিক্ষা লাভ করে ও দায়িত্বশীল হয়ে গড়ে উঠে এবং দায়িত্বশীলতা অর্জন করে। আমার মতে, শুধু একটি নির্দিষ্ট দিনেই বাবাকে ভালোবাসা, স্মরণ করা ও শ্রদ্ধা-ভক্তি করা যথেষ্ট নয়। বরং আমাদের সকলের জীবনে প্রতিটি দিনই যেন বাবা দিবস হয়।
প্রতিটি সন্তানের নিকট বট বৃক্ষের মতো ছায়াদানকারী পৃথিবীর সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয় স্থান বাবা। বাবা সম্পর্কে কারোরই অজানা নয়। বাবার শত রাগ, শাসন, অনুশাসনের মাঝে লুকিয়ে থাকে স্নেহময় ভালবাসা ও কোমলতা। বাবা শুধু একটি সম্পর্কের নাম নয়. বাবা শুধু একজন মানুষ নয়, তার হৃদয়ের মাঝে লুকিয়ে থাকে দুনিয়াজুড়ে বিশাল অদ্ভুত মায়া-মমতা ও ভালবাসা যা অনেক বাবাই প্রকাশ করতে পারেন না। বাবার কথা মনে হলেই সাথে সাথে আমার মত যেকোন বয়সের সন্তানের হৃদয়ে বাবার প্রতি শ্রদ্ধা, ভক্তি, কৃতজ্ঞতা এবং বাবার অপার ভালবাসার কথা মনে পড়ে যায়। বাবা নামে এই মানুষটি সন্তানের জন্য কতভাবে অবদান রেখে যান তার হিসেব কোন সন্তান দিতে পারবে না।
বাবা সন্তানকে অকাতরে ভালবেসে যান, তার সামর্থ্যানুযায়ী শেষ বিন্দুটুকু তার সন্তানদের জন্য উজাড় করে দিয়ে যান। নিজের জন্য কিছুই রাখেন না, তার পরেও বাবা পরম তৃপ্তিতে সন্তানের জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রাণ খুলে সবসময় মঙ্গল কামনা করে যান।
আমরা কখনো এমন করে কেন ভাবি না? সত্যি কথা বলতে, আমরা কেউ কিন্ত ভাবি না, যে বাবা খুব অল্প সময়ে সন্তানকে শক্ত করে আগলে ও সামলে রাখেন। শুধু এটাই ভাবি সে বাবা। হয়ত কিছু বাবা-মা আছেন যারা সন্তানের প্রতি দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়ে থাকেন, এরপরও বাবা-মা প্রতি সকল সন্তানেরই দায়িত্ব-কর্তব্য পালন উচিত, কারণ তারাই তাকে পৃথিবীর পথ চিনিয়েছেন।
যে সন্তান, বাবাকে অবহেলা করেন, অমান্য করেন ও তাদের প্রতি কোন প্রকার দায়িত্ব পালন করেন না, তাদের মত হতভাগ্য মানুষ পৃথিবীতে আর কেউ নাই। আমাদের সকলেরই বাবা-মায়ের সেবা-যত্ন করা, যথাযথ দায়িত্ব পালন করা একান্ত কর্তব্য। দুনিয়ায় সকল ধর্মই বাবা-মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা, ভক্তি ও সম্মানের সহিত আচরণ বা সদ্ব্যবহারের আদেশ রয়েছে। কোন ধর্মই বাবা-মায়ের সাথে খারাপ বা অসৎ আচরন করতে বলেনি।
যাদের বাবা-মা বেঁচে আছে তাদের প্রতি অনুরোধ, আপনারা আপনাদের বাবা-মায়ের সাথে সদ্ব্যবহার করুন এবং তাদের প্রতি দায়িত্ব পালন করুন। আর যাদের বাবা-মা ইহকাল ছেড়ে পরকালে চলে গেছেন, আপনারা আপনাদের বাবা-মায়ের জন্য মহান আল্লাহতালার নিকট দু’হাত তুলে দোয়া করুন যে, তারা যদি কোন গুনাহ করে থাকেন, মহান আল্লাহতালা যেন তাদের মাফ করে দেন, তাদেরকে শান্তিতে রাখেন ও জান্নাতবাসী করেন। মা-বাবার অবদান অপরিসীম যা বলে শেষ করা যাবে না। সন্তানের জন্য মা-বাবা আল্লাহরতালার দেয়া বিশেষ নিয়ামত ও অমূল্য স্বর্গীয় সম্পদ।