বাংলা নববর্ষ
পুরানো বছরের জরোজীর্ণতাকে বিদায় দিয়ে শুরু হতে যাচ্ছে নতুন বছর, নতুন সূর্যোদয় ও নতুন প্রত্যাশা। আমাদের সকলের জীবনের পুরোনো বছরের সকল অর্জন, ব্যর্থতা, হতাশা, বঞ্চনা-গ্লানি, দুঃখ-কষ্ট, পাওয়া ও না পাওয়া সবকিছু ভুলে নতুন বছরের নতুন জীবনে পা রাখি। নতুন উদ্যমে কাজ করি জীবনের উন্নতির স্বপ্ন নিয়ে।
বাংলাদেশের সার্বজনীন উৎসব:
বাংলাদেশে সার্বজনীন উৎসবে পরিণত হয় বাংলা নববর্ষ উদযাপন। বাংলা নববর্ষ সকল ধর্মের ও শ্রেণীর বাঙালীর নিকট সামাজিক ও ঐতিহ্যবাহী উৎসব। প্রতি বছরে প্রত্যেকটি বাঙালী ১লা বৈশাখে বিভিন্ন বর্ণাঢ্য আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে বাংলা নববর্ষ বরণ করে। শহর থেকে শুরু করে প্রতিটি নগরে ও গ্রামে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, খেলাধূলা, শোভাযাত্রা, ঐতিহ্যমন্ডিত খাবার আয়োজন ইত্যাদির মাধ্যমে এই বর্ষবরণ উৎসব পালন করে থাকে।
হালখাতার আয়োজন:
১লা বৈশাখ বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের কাছে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিষ্ঠানে মালিকেরা হালখাতার আয়োজন করে থাকে। ব্যবসায়ীরা হিসাব-নিকাসের নতুন খাতা খোলেন ও কিছু কিছু ক্ষেত্রে গ্রাহকের নিকট পাওনা থাকলে তা মওকুফ করা হয়। এছাড়াও ব্যবসায়ীরা গ্রাহকদের মিষ্টি ও উপহার বিতরন করে থাকেন।
করোনাকালীন উৎসববিহীন বাংলা নববর্ষ পালন:
বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে চলছে মহামারী করোনা। করোনার কারণে আমাদের সকলের জীবন এখন চলছে অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ। স্বাভাবিকভাবেই কোনো আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বের মহামারি করোনা থেকে সহসা মুক্তির প্রত্যাশা নিয়ে নতুন বছরকে বরণ করা হবে।
গতবছরেও আমাদের অনেক আপনজন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে না ফেরার দেশে চলে গেছে। আমরা যারা এখনও সুস্থ, নিরাপদ আছি, তবে জীবিত আছি। সামনের বছর হয়তো আমরা বেঁচে নাও থাকতে পারি। আমাদের জীবনের প্রতিটি সময় অত্যন্ত মূল্যবান। সময়কে অবহেলা না করে জীবনটা কাজে লাগানো অত্যন্ত জরুরি। তাই আসুন আমরা অতিতের হিংসা, বিদ্বেষ, শত্রুতা, হানাহানি ভুলে গিয়ে নতুন সূর্যোদয়ের মাধ্যমে নতুন বছরে নতুনভাবে দৃঢ় সংকল্প করি।