পবিত্র শবেকদর: হাজার রাত-দিনের চেয়ে উত্তম ও পুণ্যময় একটি রাত-দিন
হাদিস শরীফে আছে – যে ব্যাক্তি শবেকদরের রাত্রে ইমানের সহিত ইবাত-বন্দেগী করবে তার পূর্বের গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে। আর যে ব্যাক্তি এই পুণ্যময় রাত থেকে বঞ্চিত হবে সে সবচেয়ে হতভাগা।
সারা পৃথিবীর ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের নিকট শবেকদরের রাত হাজার রাতের চেয়েও উত্তম ও পুণ্যময়। শবেকদরের এই রাতকে বিশ্বের সকল মুসলমান অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে পালন করে থাকে। রমজানের ২৭শে রাতকে শবেকদর বা লাইলাতুল কদরের রাত হিসেবে পালন করা হয়, যদিও রমজানের শেষ দশদিনের যে কোন বেজোড় রাতই শবেকদরের রাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্য অনেক ধর্মপ্রাণ মুসলমান, শেষ দশ রোজার প্রতিটি বেজোড় রাতে ইবাদতে মগ্ন থাকে। তবে বেশিরভাগ সাধারণ মুসলমান ২৭শে রমজানের রাত ও দিনকে শবেকদর হিসেবে যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদা, ভাবগাম্ভীর্য, ও গুরুত্বের সাথে পালন করে থাকে।
পবিত্র শবেকদরে আমরা মুসলিমগন মহান আল্লাহর প্রতি শুকরিয়া আদায় করে থাকি, এশার সময় থেকে ফজর নামাজের পূর্ব পর্যন্ত বিশেষ ইবাদতে নিজেদের সমর্পিত করি। শবেকদরের এই রাত্রে সকল ধর্মপ্রাণ মুসলমান নারী ও পুরুষ আল্লাহর রহমতের জন্য সারা রাত জেগে থাকে, ঘরে বা মসজিদে নফল নামাজ-কালাম, দোয়া-দরুদ, ওয়াজ-মাহফিল, মিলাদ-মাহফিল, যিকির, কোরআন তেলাওয়াত, ইত্যাদি করে থাকে।
রমজান পবিত্র মাস, রহমতের মাস, বরকত, মাগফেরাত, দুনিয়ার কল্যাণ লাভের সেরা মাস। এই পবিত্র রমজান মাসে পবিত্র কোরআন নাযিল হয়েছিল। এই মাসে আমরা শবেকদরের মতো পবিত্র দিন পালনের সৌভাগ্য পালন করেছি। তাই আমাদের উচিত এই রাতকে জাগিয়ে রাখা, বেশি বেশি নফল নামাজ পড়া, দোয়া কালাম পড়া, কোরআন তেলাওয়াত করা, দরুদ শরীফ পড়া, জিকির করা, তওবা করা, তওবার নামাজ পড়া, কবর জিয়ারত করা, ও আরও অন্যান্য নফল ইবাদত করা। নিজের জন্য, পরিবারের জন্য, পিতা-মাতার জন্য, আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবের জন্য, পাড়া-পড়শীর জন্য ও সকল মুসলিম উম্মার জন্য দোয়া ও ক্ষমা প্রার্থনা করা।
আরও পড়ুন রমজানে খাদ্যাভ্যাস ও অন্যান্য দৃষ্টিভঙ্গি কেমন হওয়া উচিত?
পবিত্র রমজান মাস, শবেকবরাত, শবেকদর, ঈদুলফিতর ও ঈদুল আযহা এই দিনগুলি পালনে যেমন আত্মা পরিশুদ্ধ হয় তেমনি মানুষের প্রতি মানুষের সহমর্মিতা ও ভ্রাতৃত্ব বোধ উন্নত করে। এইযে আমরা দুনিয়ায় ভালভাবে বেঁচে আছি, অবশ্যই তা আল্লাহর অশেষ রহমত, যদি আল্লাহর রহমত না হতো আমরা আরো কষ্টে দিন কাটাতাম।তাই আমাদের সবসময় মহান আল্লাহতালার নিকট শুকরিয়া আদায় করা উচিত।আমিন।